//
I'm
রাজনীতি প্রতিদিন শেখার বিষয়
Date : May 12, 2022, 10:03 a.m.
Blogger Name: নূর মোহাম্মাদ আবু তাহের
রাজনীতি প্রতিদিন শেখার বিষয়; আমার মতো শিক্ষানবিশ তরুণের জন্য তো বটেই। প্রতিদিন শিখছি।
রাজনীতির মাঠে অন্যতম আলোচিত টার্ম 'সমালোচনা'। আপনি রাজনীতি করবেন, আর সমালোচনার ভয় পাবেন—দুটো একসাথে যায় না।
এখন সমালোচনাকে আপনি কীভাবে ডিল করবেন? আমি যেটা করি—প্রথমে সমালোচনার গ্রাউন্ড খুঁজে দেখি। নিজের শুধরানোর কিছু থাকলে নিরবে শুধরে যাই। অযৌক্তিক কিংবা ক্ষেদে ভরা নিছক সমালোচনাকে যতদূর সম্ভব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।
এতটুকু বুঝি—প্রত্যেকেই একটা ফিল্টারের মধ্য দিয়ে নিজস্ব বোঝাপড়ায় উপনীত হয়েছে। প্রত্যেকেই স্বীয় বুঝের আলোকে অন্যকে মূল্যায়ন/বিচার করে। প্রত্যেকের বুঝকে সম্মান জানিয়ে নিজ বুঝের আলোকে কাজ করে যাওয়াটাই উত্তম (যদি নিজ অবস্থানের ব্যাপারে অহমিকামুক্ত আস্থা থাকে)। তিলে তিলে গড়ে ওঠা বুঝকে একদিনে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমি নিজেই তো কারও মতের ওপর খুব সহজে দাঁড়াই না; অন্যরা কেন আমার মতকে মেনে নিবে?
আমি যেটা চেষ্টা করি—নিজের বোঝাপড়াকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নিই। সমাজে তাঁর ইমপ্লিমেন্টেশনে যাই। তত্ত্ব আর বাস্তবতার মেল্টিং করে দেখি আদতে এই চিন্তাটা ফাংশন করে কিনা।
সোস্যাল মিডিয়া আলোচনা-সমালোচনার এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখানে সবাই যা ইচ্ছে মন্তব্য করতে পারে, মতামত উপস্থাপন করতে পারে। এটা নিয়ে খুব সিরিয়াস না হওয়ার অভ্যাসটা গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতি কেবলই সোস্যাল মিডিয়া নির্ভর নয়। রাজনীতির মূলাংশ বাস্তবের মাঠে, যেখানে সোস্যাল মিডিয়া খুবই কম প্রভাবক। নিঃসন্দেহে সোস্যাল মিডিয়ার প্রভাব সমাজে বিদ্যমান, তবে আপনি যখন বাস্তব মাঠে মানুষের জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবেন, তখন প্রভাবক হয়ে উঠবে আপনার দৈনন্দিন জীবনধারা।
কাজে লেগে থাকাটা জরুরি। যেভাবে আমি সমাজকে দেখতে চাই, তার লড়াইটা জারি রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক একাডেমিক আলাপ হয়, আলাপগুলো হয়তো অনেক আবেদন তৈরি করে। কিন্তু আপনি যদি বাস্তব মাঠে আপনার ঈপ্সিত সমাজ গঠনে তৎপর না হতে পারেন, একাডেমিক ডিস্কাসন সুপার ফ্লপ হতে বাধ্য। আমাদের অনেকবেশি একাডেমিশিয়ান দরকার, যেন তারা আমাদের পথরেখা এঁকে দিতে পারেন। একইসাথে আমাদের অনেকবেশি লড়াকু সৈনিক দরকার, যারা এঁকে দেওয়া একাডেমিক বোঝাপড়াকে বাস্তবে রূপায়ণ করবেন।
জ্ঞান ও বুঝের দ্বন্দ্ব বহু আগে থেকেই চলে আসছে। এটা আজকে এসে থেমে যাবে, এমনটা আশা করা অতিরিক্ত ফ্যান্টাসি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিয়ত আর ইখলাসকে দেখবেন।
কাজ করে যাই সবাই। কাজেই পৃথিবী বদলে যায়। হ্যাঁ, কাজের ধরণটা সঠিক হওয়া চাই। কিন্তু এই 'সঠিক' ধরণ নিয়েই দ্বন্দ্ব; বহু পুরনো দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব চাইলেই শেষ হবে না। মনে রাখা উচিৎ, দীর্ঘমেয়াদী সঠিক ধারাই দুনিয়ার বুকে টিকে থাকবে এবং এই ধারাকে আল্লাহ তায়ালাই উচ্চকিত রাখবেন। তবে নিয়তের পবিত্রতা সম্পন্ন মুখলিস ভুল ধরণের পরিশ্রমীদের আমল একেবারে বরবাদ হয়ে যাবে, এমনটা আমার জ্ঞানে সায় দেয় না। এই মুখলিসদের কাজের প্রভাব তৈরি হবে না হয়তো কিংবা দীর্ঘমেয়াদে তাদের কাজ টিকেও থাকবে না; তবে তাদের ব্যক্তিগত অর্জন একেবারে শুন্য হওয়ার কথা না। আমাদের যদি মনে হয়, কেউ ভুল ধরণের মধ্য দিয়ে দৌড়াচ্ছে, আন্তরিকভাবে তাঁকে সঠিক ধরণের দিকে আহ্বান করব। কেউ আমার মতো করে না শোধরালে এটা ভেবে নেবো—হয়তো আমিই ভুল।
একটা ব্যাপারে আমার বুঝ পরিস্কার—যারা কেবল একাডেমিক ডিস্কাশনে মাতোয়ারা, কিন্তু স্বীয় বুঝের আলোকে রোল প্লে করতে নারাজ, তাদের দ্বারা দুনিয়াতে কোনো বৈপ্লবিক পরিবর্তন সংঘটিত হবে না। মুক্তি, পরিবর্তন আসে কর্মে।
কত কাজ বাকি?
July 21, 2021 | 100 Comments